রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার মহাসড়কে ডাকাতির অভিযোগে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছ র্যাব।
বাহিনীটি বলছে, ডাকাত সর্দার আবুল ট্রাক চালকের ছদ্মবেশে দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতি করে আসছিলেন। পাশাপাশি তার দলের সদস্যরা বিভিন্ন পেশার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতি করে আসছেন।
আটককৃতরা হলেন- আবুল হোসেন, রহমত আলী, জসিম মিয়া, নয়ন মিয়া, মো. ইব্রাহীম, মো. ইদ্রিস, মো. মাসুদ রানা, কফিল উদ্দিন, হাসান আলী, জুয়েল ও মো. আলমাস।
গত ৩১ ডিসেম্বর ও ১ জানুয়ারি পৃথক অভিযানে রাজধানীর কদমতলী থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় ডাকাত সদস্যদের কাছ থেকে ডাকাতি করে নেওয়া একটি পিকআপসহ ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত দুটি গাড়ি চাপাতি, ছুরি, চারটি গামছা, তিনটি রশি, ১১টি মোবাইল ফোন, একটি হাতঘড়ি ও ৭ হাজার টাকাসহ ডাকাতিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিস উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর টিকাটুলিতে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘গত ৩১ ডিসেম্বর ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ থেকে নোয়াখালীগামী কনস্ট্রাকশন এডমিক্সারবাহী একটি ট্রাক কুমিল্লা মহাসড়কে গতিরোধ করে চালককে মারধর ও অস্ত্রের মুখে মালামালসহ গাড়ি ছিনতাই করে নেয়। এই ঘটনায় লামাই থানায় মামলা দায়ের করলে ছায়া তদন্তে নামে র্যাব। পরে পৃথক তিন অভিযানে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
অধিনায়ক আরিফ বলেন, ‘দুর্ধর্ষ এই ডাকাত দলের সদস্যরা রাজধানী ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করে। তারা দৃশ্যমান পেশা হিসেবে বিভিন্ন পেশায় কাজ করলেও ডাকাতিই তাদের মূল পেশা। দলটির সর্দার আবুলের নেতৃত্বে মহাসড়কে পণ্যবাহী যানবাহনে ডাকাতি, বাসে ডাকাতি, ঘরবাড়ি ও দোকানে ডাকাতি ও প্রবাসী যাত্রীদের টার্গেট করে ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে।’
জিজ্ঞাসাবাদে ডাকাত সদস্যরা জানান, মহাসড়কে নির্জন কোনো স্থানে এসে টার্গেটকৃত গাড়িটিকে ওভারটেক করে গতিরোধপূর্বক গাড়িতে থাকা ড্রাইভারসহ সবাইকে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, সুইচ গিয়ার, চাপাতি, স্টিলের পাইপ ইত্যাদি দ্বারা মারপিট করে ও প্রাণে মেরে ফেলার ভয়ভীতি দেখিয়ে হাত-পা ও মুখ বেঁধে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে গাড়ি এবং মালামাল নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। যখন মহাসড়কে ডাকাতি করা সম্ভব না হয় তখন বাড়িঘর এবং দোকানপাটে ডাকাতি করে। রাজধানীর কদমতলী থানার এলাকায় একটি পণ্যবাহী গাড়ি ডাকাতি করে নেওয়া পিকআপ এবং ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও সরঞ্জামাদিসহ তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ডাকাত সর্দার আবুলের বিষয়ে র্যাব-৩ অধিনায়ক বলেন, ‘আবুল হোসেন পেশায় একজন ট্রাকচালক। তার এই পেশার আড়ালে সে সরাসরি ডাকাত দলটির নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। তার অন্যতম সহযোগী হিসেবে মাসুদ রানা ডাকাতির কার্যক্রম চালায়। মাসুদ মূলত একজন মাছ ব্যবসায়ী এবং সে তার ব্যবসার আড়ালে ডাকাতি করত। মাসুদের নামে মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানার ডাকাতি মামলা রয়েছে।’
জসিম এবং জুয়েল পেশায় মিনি ট্রাক চালক। ডাকাতিকৃত যানবাহনগুলো তারা সুকৌশলে বিভিন্ন স্থানে চোরাকারবারির কাছে পৌঁছে দিত। জসিমের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানায় এবং পদ্মা সেতু (দক্ষিণ) থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে পৃথক ২টি মামলা রয়েছে। এছাড়াও জুয়েল ডাকাতি করে আনা কিছু গাড়ি সংরক্ষণ করত। জুয়েলের নামে একটি দস্যুতা মামলা রয়েছে।