আরশাদ মামুন, নিজস্ব প্রতিবেদক: ভোলার লালমোহন উপজেলায় মা ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম উপলক্ষ্যে চলছে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা। এ সময় ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতসহ ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ থাকবে। শুক্রবার (৩অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া এ নিষেধাজ্ঞা চলবে আগামী ২৫ শে অক্টোবর পর্যন্ত। নিষেধাজ্ঞার এই ২২ দিনে উপজেলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ শিকার করা জেলেরা পুরোপুরি কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। ইতোমধ্যেই এই উপজেলার জেলেরা তাদের মাছ ধরা নৌকা, ট্রলার ও জালসহ প্রয়োজনীয় মাছ ধরা সরঞ্জামসহ তীরে ফিরে এসেছেন। যদিও এই নিষেধাজ্ঞার আগেও ইলিশের তেমন দেখা পাননি জেলেরা। এতে করে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে জেলেদের মধ্যে।
উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের জেলে মো. ইব্রাহিম মাঝি ও ইদ্রিছ মাঝি বলেন, এ বছর নদীতে ইলিশের চরম খড়া ছিল। নদীতে মাছ শিকারে গিয়ে অনেক সময় তীরে ফিরে মাছ বিক্রি করে দেখা যেতো তেলের টাকাও উঠেনি। এতে করে আমাদের এলাকার জেলেরা চরম কষ্টে দিনপার করেছেন। এখন আবার মা ইলিশ রক্ষার জন্য টানা ২২ দিন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। আমরা এই নিষেধাজ্ঞা মেনে চলার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। তবে আমাদের দাবি; যথা সময়ে যেন বরাদ্দের চালগুলো বিতরণ করা হয়। এছাড়া নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে যেন এনজিওগুলোর কিস্তি আদায় বন্ধ রাখা হয়।
উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, লালমোহনে নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন ২৪ হাজার ৮০৬ জন। যারা উপজেলার ছোট-বড় অন্তত ২৭ ঘাট দিয়ে নদী-সাগরে মাছ শিকারে নামেন। সরকার ঘোষিত মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৫ বাস্তবায়ন করতে এসব জেলেদের মাছ ধরা থেকে থাকতে বলা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে জেলেদের জন্য সরকারি খাদ্য সহায়তার চাল বরাদ্দ রয়েছে।
লালমোহন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আলী আহমদ আখন্দ বলেন, এই নিষেধাজ্ঞার আগে আমরা জেলেদের নিয়ে কয়েকটি সচেতনতা সভা করেছি। আশা করছি জেলেরা ২২দিনের এই নিষেধাজ্ঞায় সব ধরনের মাছ ধরা থেকে বিরত থাকবেন। তারপরও কেউ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ শিকারে গেলে তার বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহ আজিজ জানান, নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে জেলেদের জন্য চালের বরাদ্দ রয়েছে, যা দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্ডধারী জেলেদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। এছাড়া নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে কিস্তি বন্ধ রাখার জন্য এনজিওগুলোর সঙ্গে কথা বলবো। তবে এবারের মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান সফল করতে আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। অভিযানে পুলিশ, কোস্টগার্ড ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যরা আমাদের সঙ্গে থাকবেন।