দামুড়হুদা উপজেলার কোষাঘাটা গ্রামে ওয়েভ ফাউন্ডেশন পরিচালিত একটি খামারে পালন করা হচ্ছে মরুর প্রাণী দুম্বা। এলাকার আবহাওয়া দুম্বা পালনে অনুকূল হওয়ায় বেড়েছে খামারের পরিধি। চুয়াডাঙ্গা-দর্শনা মহাসড়কের পশ্চিম পাশে কোষাঘাটা গ্রামের ৪২ বিঘা জমির ওপর গড়ে তোলা হয়েছে এই খামার। এখানে ছাগল, মুরগি পালনসহ রয়েছে মাছের হ্যাচারিও।
এ খামারে ২০১৯ সালের নভেম্বরে ঢাকার সাদেক অ্যাগ্রো থেকে আট লাখ ৭৫ হাজার টাকায় আয়োশি ও রেড মাসাই জাতের ছয়টি দুম্বা কিনে আনা হয়। এর মধ্যে একটি পুরুষ এবং পাঁচটি স্ত্রী। এরা বছরে দুইবার বাচ্চা দেয়। শাবকগুলো সবুজ ঘাস, খড়, গম, ছোলা খেয়ে বেড়ে ওঠে।
বর্তমানে এই খামারে ১৬টি বড় ও আটটি শাবক মিলিয়ে মোট ২৪টি দুম্বা রয়েছে। চার বছরে আট লাখ ৩৪ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে ১৯টি দুম্বা।
খামার কর্মকর্তা এনামুল হক জানান, দুম্বা লাইভ ওয়েটে বিক্রি করা হয়। এক থেকে ৩০ কেজি ওজনেরগুলো দুই হাজার টাকা কেজি, ৩০ থেকে ৫০ কেজি এক হাজার ৭৫০ টাকা ও ৫০ কেজির ওপরে গেলে এক হাজার ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়।
এগুলো সাধারণত পোষার জন্য কিনে নিয়ে যায়। দুম্বা ছাগল-ভেড়ার মতো গমের ভুসি, চালের কুড়া, মাল্টিভিটামিনসহ বিভিন্ন খাদ্য মিশিয়ে তাদের তিন বেলা খাবার দেওয়া হয়। এ ছাড়া সবুজ ঘাস, কাঁঠালপাতা তাদের পছন্দ।
তিনি আরো জানান, দেশের অন্যান্য স্থানে কমবেশি যাঁরাই দুম্বা পালন করছেন, কেউই লোকসানে নেই। কারণ ছাগল-ভেড়ার মতোই দুম্বা লালন-পালন করা যায়।
বংশও বৃদ্ধি করে ছাগল-ভেড়ার মতোই। আবহাওয়া, খাবার, চিকিৎসায়ও নেই সমস্যা। তিন-চার বছরে পরিণত হয় একটি পূর্ণবয়স্ক দুম্বা। তখন এর ওজন হয় ১০০ থেকে ১২০ কেজি পর্যন্ত। দাম হতে পারে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা। কোরবানির সময় দুম্বার চাহিদা বাড়ে।
দামুড়হুদা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নীলিমা আক্তার হ্যাপি বলেন, দুম্বা ও ভেড়া কাছাকাছি প্রাণী। দুম্বা মরুর প্রাণী হলেও এটি একটি সহনশীল প্রাণী। দেখতে ভেড়ার মতো, তবে পেছনের অংশ ভারী। ভেড়ার মতোই দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে। মাংস উৎপাদনে ছাগল-ভেড়ার চেয়ে এগিয়ে। তিনি আরো বলেন, অর্থনৈতিক দিক দিয়ে ছাগল-ভেড়ার চেয়ে দুম্বা পালন লাভজনক। কোরবানির সময় থাকে প্রচুর বাণিজ্যিক সম্ভাবনা।
