ঢাকা সোমবার , ৯ ডিসেম্বর ২০২৪
আজকের সর্বশেষ সবখবর

উজিরপুরে চাঞ্চল্যকর জোড়া হত্যা মামলার অন্যতম আসামি মিজান মিয়া ও তার ভাই মনিরুজ্জামান গ্রেফতার

vorer angikar
ডিসেম্বর ৯, ২০২৪ ৬:৩৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

নাজমুল হক মুন্না ঃ বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের চাঞ্চল্যকর জোড়া হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ওরফে মাথা কাটা মিজান ও তার ভাই মনিরুজ্জামান কে গ্রেপ্তার করেছেন উজিরপুর মডেল থানা পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেন উজিরপুর মডেল থানার এসআই ওসমান গনি। তিনি জানান ৯ ডিসেম্বর সকাল ৯ টায় উজিরপুর পৌর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি আরো জানান গত ৪ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে শৈলার খালের ঘের থেকে  মাছ নিয়ে বাজারে যাওয়ার পথে মিজান ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে অভিনব কায়দায় রাস্তায় বেরিগেট সৃষ্টি করে কয়েক লক্ষ টাকার মাছ লুট করে নিজ বাড়িতে জিম্মি করে রাখে। এসময় উজিপুর মডেল থানা পুলিশ মাছ উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় মোস্তফা মিয়া বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান মিজান সহ তার ভাইকে হত্যাসহ তিনটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

উজিরপুর মডেল থানা পুলিশ ও ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,  বরিশালের  উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের সাতলা সমন্বিত  মৎস্য ঘেরের জমি মালিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার প্রতিবাদে  ইতিপূর্বে দুইবার  মানববন্ধন করেছেন ঘেরের মালিকেরা।  সাতলা ইউনিয়নে অবস্থিত সাতলা সমন্বিত মৎস্য ঘেরের পাড়ে এই মানববন্ধন হয়েছিল।    

স্থানীয় সূত্র জানায়, ভূপ্রকৃতিগত কারনে উজিরপুরের সাতলা, জল্লা ও হারতা তিন ইউনিয়নের অধিকাংশ জমি পানিতে নিমজ্জিত থাকায় একটি ফসল ফলে।  বছরের বাকি সাত মাস জলাবদধ থাকায়  এসব জমিতে জমি মালিকেরা মিলে মাছ চাষ করেন। পশ্চিম সাতলা এলাকার  প্রায় দুই হাজার একর আয়তনের এমন ঘেরটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। সাতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খায়রুল বাশার একটি পক্ষে এবং অপরপক্ষে রয়েছেন বতর্মান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাদারন সম্পাদক শাহিন হাওলাদার।  আগে এই বিশাল ঘেরটি সাবেক চেয়ারম্যান খায়রুল বাশারের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও ২০২৩ সালে বর্তমান চেয়ারম্য শাহিন হাওলাদার ও তাঁর লোকজন ঘেরটি নিয়ন্ত্রণ নেন। এনিয়ে বিরোধ চলছে দুপক্ষে।  সম্প্রতি ঘরের দ্বন্দ্ব নিয়ে  স্থানীয় ইদ্রিস  হাওলাদার তাঁর চাচাতো ভাই সাগর হাওলাদার খুন হন। এ ঘটনায় বর্তমান চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারসহ ২৬ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা হয়। এই মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার কারাগারে ছিলেন।

গত ১৫ নভেম্বর শাহিন হাওলাদারের লোকজন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। এতে খুন হওয়া ইদ্রিস হাওলাদারের ছেলেকে প্রধান আসামি করা হয়।

ঘের মালিক সমিতির  সভাপতি ফয়জুল হক বালি ফারাহীন বলেন, গত  ২৪ আগস্ট মৎস্য ঘের সংক্রান্ত বিরোধের জেরে  নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন সাতলা বাজারের ব্যবসায়ী ও ঘের মালিক ইদ্রিস হাওলাদার  ও তাঁর চাচাতো ভাই সাগর হাওলাদার।

 এ মামলায় সাতলা  ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারসহ ২৬ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় বর্তমানে ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার জেল হাজতে খাটেন। এর প্রতিশোধ নিতে ও ঘের দখল করে মাছ লুট করার অসৎ উদ্দেশে নিহত  ইদ্রিস হাওলাদারের কলেজ পড়ুয়া ছেলে নায়েব হাওলাদারকে (১৯) প্রধান আসামি করে ১৫ জন জমির মালিকের
বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলায় ইদ্রিস ও সাগর হত্যা মামলার ২২ নম্বর  আসামি  মিজান মিয়ার ছোট বোন মমতাজ খানমকে বাদী করে মামলা করেছিলেন ।  

তিনি বলেন, হত্যা মামলাকে ধামাচাপা দিতে এবং  এই এলাকার ঘের দখল নেওয়ার জন্যেই হয়রানিমূলক এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনি মিজানের গ্রেপ্তারে  স্বস্তি প্রকাশ করে বলেন আমরা ইদ্রিস ও সাগর হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই। স্থানীয়রা মিজানের গ্রেফতার তাৎক্ষণিক এলাকার আনন্দ মিছিল করেন। 

উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুস সালাম জানান, মিজানের বিরুদ্ধে হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে, কোর্টের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।