বাবুগঞ্জ (বরিশাল), প্রতিনিধিঃ এক বছরের সফল প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন শেষে বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ ফারুক আহমেদের বিদায়কে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর দায়িত্ব নেওয়া এই কর্মকর্তা ২০২৫ সালের ৩ ডিসেম্বর দায়িত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিলে স্থানীয় মহলে বিষয়টি বিশেষভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করে। জনপ্রিয় এ কর্মকর্তার বিদায়ী বার্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে।
সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে তার বদলির আদেশ জারি হয়। খবরটি ছড়িয়ে পড়ার পর সাধারণ মানুষ থেকে জনপ্রতিনিধি-সকল মহলেই হতাশা ও ক্ষোভ দেখা দেয়। স্থানীয়রা জানান, দায়িত্বকালীন সময়ে সেবামুখী পদক্ষেপ, স্বচ্ছতা, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং মানবিক উদ্যোগের কারণে তিনি অল্প সময়েই ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।
তার বদলির প্রতিবাদে ৩ ডিসেম্বর বাবুগঞ্জে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। অংশগ্রহণকারীরা বলেন, “এমন সৎ, মানবিক ও পরিশ্রমী ইউএনওকে হারানো বাবুগঞ্জের জন্য বড় ক্ষতি হবে।”
বৃহস্পতিবার ৪ ডিসেম্বর সকাল ১১.টায় বাবুগঞ্জের সকল কর্মরত সাংবাদিকদেরকে পক্ষ থেকে বিদায়ী সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাবুগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক সাইফুল রহিম, সাবেক সভাপতি শাহজাহান খান, সাইফুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোঃ রফিকুল ইসলাম, বিমান বন্দর প্রেসক্লাবের সভাপতি আরিফ আহমেদ মুন্না, বাবুগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আরিফ হোসেন, রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি শাহাবুদ্দিন বাচ্চু,
বিমানবন্দর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রোকনুজ্জামান, সাংবাদিক মোঃ রফিকুল ইসলাম।
বিদায়ী বার্তায় ইউএনও ফারুক আহমেদ বাবুগঞ্জবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন-
“অমিত সম্ভাবনার আধার বাবুগঞ্জ উপজেলা থেকে বিদায়ের বেলা চলে এসেছে। আপনাদের ভালোবাসা ও দোয়ার শক্তিতে অনুপ্রাণিত হয়েই বিদায় নিচ্ছি। আপনাদের আস্থা ও বিশ্বাস আমাকে সবসময় এগিয়ে যেতে সহায়তা করেছে।”
তিনি আরও জানান, তার নতুন কর্মস্থল হবে ঢাকা-বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষে উপপরিচালক হিসেবে। একইসঙ্গে অনুরোধ জানান, নবাগত ইউএনওকেও বাবুগঞ্জের মানুষ যেন পরিবারের সদস্যের মতোই সহযোগিতা করেন। শেষে তিনি সবার কল্যাণ ও অগ্রগতির জন্য দোয়া কামনা করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তিনি নিয়মিত অনিয়ম দমন, সামাজিক সমস্যা সমাধান, জনসেবার গতি বাড়ানো এবং দরিদ্র পরিবারগুলোর বাড়িতে গিয়ে সহায়তা প্রদান করেন। দুর্যোগ-পরবর্তী ত্রাণ বিতরণ, শিক্ষার্থীদের সচেতনতা কার্যক্রম ও উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নেও তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়।
প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, তার বদলির আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হলে নতুন ইউএনও দ্রুতই দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। তবে তার বিদায়কে কেন্দ্র করে যে আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে-তা আবারও প্রমাণ করে বাবুগঞ্জবাসীর কাছে তিনি কতটা প্রিয় ছিলেন।
