আরশাদ মামুন, নিজস্ব প্রতিবেদক: ভোলার লালমোহন উপজেলার কালমা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের তরুল্লাহ সেন্টার এলাকার বাসা বাড়ি সংলগ্ন নাজিরপুর খালের ওপরের আয়রন ব্রিজটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। ব্রিজের বেশির ভাগ অংশের হাতল ভেঙে গেছে। মাঝখানে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। একপাশের অংশ ধ্বসে পড়েছে। তবুও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রয়োজনের তাগিদে বিপজ্জনক ব্রিজটির ওপর দিয়ে যাতায়াত করছেন মানুষজন। শিক্ষার্থীরা ব্রিজ পার হয়ে যাচ্ছে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসায়। দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে ব্রিজের ভেতর সৃষ্টি হওয়া গর্তের ওপর দেওয়া হয়েছে কাঠের পাটাতন। যানবাহন তো দূরের কথা, ব্রিজের ওপর দিয়ে মানুষ হাঁটলেই থরথরে কাঁপতে থাকে। ব্রিজটি এখন যেন মৃত্যুকে হাতছানি দিচ্ছে!
জানা গেছে, প্রায় ২৫ বছর আগে এই আয়রন ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। যার দৈর্ঘ্য অন্তত ৩০ মিটার। নির্মাণের পর বেশ কয়েক বছর ধরে কোনো রকমের মেরামত না করায় ব্রিজটি ধীরে ধীরে জরাজীর্ণ হয়ে পড়তে শুরু করে। গত দুই বছর ধরে ব্রিজটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে রয়েছে। তবুও প্রয়োজনের তাগিদে জরাজীর্ণ ব্রিজটির ওপর দিয়েই প্রতিদিন যাতায়াত করছেন কয়েকটি গ্রামের শিক্ষার্থীসহ কয়েক হাজার মানুষ। লালমোহন উপজেলার কালমা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের জরাজীর্ণ ব্রিজটির পশ্চিম পাশে বিশ্বাসের পাড়, আর পূর্ব পাশে তরুল্লাহ সেন্টার।
স্থানীয় শিক্ষার্থী মোসা. ইকরা ও সাবিহা আক্তার জানায়, এই ব্রিজটির খুবই খারাপ অবস্থা। ব্রিজের ভেতরে কয়েকটি বড় বড় গর্ত। আমাদের ব্রিজটি পাড় হয়ে স্কুলে যেতে খুব ভয় হয়, মনে হয় এই বুঝি ভেঙে খালের মধ্যে পড়ে যাচ্ছে ব্রিজটি। আমাদের মতো এই এলাকার সকল শিক্ষার্থীরাই ব্রিজটির ওপর দিয়ে চলাচল করতে ভয় পান।
মাওলানা মো. মনছুর, ঈসমাইল বিশ্বাস ও মাওলানা মো. কাজি শাহে আলম নামে কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, এই ব্রিজটি আমাদের গ্রামসহ আশেপাশের আরো কয়েকটি গ্রামের মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ব্রিজের ওপর দিয়ে মানুষ তাদের প্রয়োজন সারতে হাসপাতাল এবং লালমোহন সদরে যান। এছাড়া আশেপাশের স্কুল, মাদরাসা এবং কলেজের শিক্ষার্থীরাও এই ব্রিজটির ওপর দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন। তবে ব্রিজটির এখন খুবই বাজে অবস্থা। যার ফলে সাইকেল ছাড়া আর কোনো যানবাহনই এই ব্রিজের ওপর দিয়ে চলতে পারে না। মানুষ হাঁটলে থরথর কাঁপে ব্রিজটি। এ জন্য ভয়ের পাশাপাশি হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পোহাচ্ছেন। কয়েকবার সংশ্লিষ্ট দফতরে যোগাযোগ করেও কোনো লাভ হয়নি। তাই সরকারের কাছে অনুরোধ করছি; স্থানীয় হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য অতিশিগগিরই যেন ব্রিজটি অপসারণ করে এখানে নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণের প্রয়োজন উদ্যোগ নেওয়ার।
এ বিষয়ে এলজিইডির লালমোহন উপজেলা প্রকৌশলী রাজীব সাহা জানান, ব্রিজটি আমরা পরিদর্শন করেছি। এটি আর মেরামত করার মতো অবস্থায় নেই। নতুন করে ওইস্থানে ব্রিজ নির্মাণ করতে হবে। এ জন্য আমরা ওই ব্রিজটিসহ উপজেলার আরো কয়েকটি জরাজীর্ণ ব্রিজের তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। বরাদ্দ পেলেই ব্রিজগুলোর নির্মাণ কাজ শুরু করা যাবে।